জুলাই সনদ নিয়ে ডেভিড বার্গম্যানের অভিমত

 জুলাই সনদের সমন্বিত খসড়া পড়েছেন যুক্তরাজ্যের সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান। এ বিষয়ে তিনি তাঁর অভিমত জানিয়েছেন।

আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে এই অভিমত জানান ডেভিড বার্গম্যান। তিনি অনেক বছর ধরে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে লিখে আসছেন।

জুলাই সনদ নিয়ে ডেভিড বার্গম্যানের দেওয়া পোস্টটি তুলে ধরা হলো—

আমি সবে ২৭ পৃষ্ঠার জুলাই সনদের একটি অনানুষ্ঠানিক ইংরেজি সংস্করণ পড়লাম, যেটা বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে। এই সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য প্রতিফলিত হওয়ার কথা। আমার কিছু ভাবনা:

  ref  ...প্রথম আলো 

১. এটি একটি জটিল নথি এবং এটা বুঝে উঠতে সময় লাগবে। তবে প্রথম দেখায় মনে হচ্ছে, অধিকাংশ প্রস্তাবই সাধারণ বুদ্ধিতে গ্রহণযোগ্য প্রগতিশীল সংস্কার। এগুলোর লক্ষ্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও স্বাধীন করা এবং প্রধানমন্ত্রীর হাতে কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা কমানো। এতে এমন ধরনের সংস্কার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা আমার মনে হয়, সংবিধান সংস্কারে আগ্রহী বেশির ভাগ মানুষই সমর্থন করবেন। 

  ref  ...প্রথম আলো 

 

২. আমি লক্ষ করছি যে ‘রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি’ প্রসঙ্গে একধরনের কৌশলী অস্পষ্টতা রাখা হয়েছে। মূলনীতিগুলোতে বর্তমানে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দটি অন্তর্ভুক্ত আছে। শব্দটি এখন ইসলামি ডানপন্থীদের আক্রমণের মুখে, যারা এখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে আরও প্রভাবশালী শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

সনদের ৭ অনুচ্ছেদে প্রস্তাব, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি’ অংশে অন্তর্ভুক্ত করা হবে ‘সমতা, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি’।

আমার মনে হয়েছে, ধারাটি এই অংশ বাতিল করার কথা বলছে না (যদিও কেউ বলতে পারেন যে তেমনটা অনুমিত হয়)। ধারাটি বরং কেবল এই নতুন শব্দগুলো অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলছে। যদি আমার বোঝা ঠিক হয়, তাহলে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দ নিয়ে বিতর্কের মীমাংসাটি ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকারের হাতে হওয়ার সুযোগ থাকছে। এটি একটি ইতিবাচক বিষয়।

 

৩. সংসদের দ্বিতীয় কক্ষ গঠনের লক্ষ্য হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর এবং যেকোনো নতুন সরকারের ক্ষমতার ওপর একটি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা এবং এটি হয়তো ঠিক তা-ই করবে, তবু বিষয়টি বাস্তবে কী দাঁড়াবে, তা এখনো অস্পষ্ট। রাজনীতিবিদ আরও বাড়ানোটা বাংলাদেশের সমস্যা সমাধানের উপায়ের মধ্যে পড়ে কি না, এ প্রশ্ন খুবই সত্যি।

৪. শেষ অংশে এই নথিকে সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়েছে বলে মনে হয়। এমনকি বর্তমান সংবিধানেরও ওপরে গিয়ে।

  ref  ...প্রথম আলো